অনুবাদ মিডিয়া আল্প আরসালান ভলিউম ২২ বাংলা সাবটাইটেল

ভলিউম দেখতে পোস্টের নিচে যান
পাচ বছর শাসন করে ১৬৬১ সালে কোপরুলু মাহমুদ মৃত্যুবরণ করে।
মতোই অটোমান সাম্রাজ্য পরিচালনা করে। মৃত্যুশয্যায় বিশ বছর বয়সী
সুলতানের জন্য অবশ্য পালনীয় চারটি নীতি প্রস্তুত করে দিয়ে যায় কোপরুলু ঃ
কখনো কোনো নারীর পরামর্শে কান না দেয়া; কখনো কোনো প্রজাকে বেশি
ধনী না হতে দেয়া; সবসময় জনগণের রাজকোষ পূর্ণ রাখা; সবসময় ঘোড়ার
পিঠে থাকা, সেনাবাহিনীকে নিয়মিত কাজে ব্যস্ত রাখা।
বন্তত সুলতান মাহমুদ নিজের জীবনের বেশির ভাগ সময় ঘোড়ার পিঠে
কাটিয়েছেন কিন্ত কোনো যুদ্ধে নয়, ঘোড়দৌড়ের মজা লাভের জন্য।
বাল্যকাল থেকেই সব ধরনের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী সুলতান ছিলেন
ঘোড়দৌড়ে পারদর্শী ও দক্ষ শিকারি। সুলতানের ক্রীড়া অভিযানের কারণে
বলকান ও আদড্রিয়ানোপল অঞ্চলের প্রজারাও প্রস্তুত থাকত। একবার এক
উপলক্ষে পনেরোটি পৃথক জেলা থেকে প্রায় ত্রিশ-চল্লিশ হাজার কৃষকদেরকে
একত্রে জড়ো করা হয়।
“চার-পাঁচ দিনের জন্য বনের গাছপালায় শব্দ করার
জন্য নিয়োগ দেয়া হয় তাদের… এই চক্রের মাঝে সকল প্রকার বন্য পশুকে
বন্দি করে ফেলা হয়। তারপর নির্দিষ্ট দিনে মহান প্রভু কুকুর, বন্দুক বা অন্য
কোনোভাবে তাদের হত্যা করেন।” গ্রামাঞ্চলের ওপর এই বাহিনীর ভরণ-
পোষণের জন্য শুল্ক আরোপ করা হয়। প্রচণ্ড শীতে, অপরিচিত জঙ্গলে পরিশ্রাত্ত
ও ক্ষতি স্বীকার করে অনেকেই সুলতানের অবসরকালের উদ্দেশ্যে নিজেদের
জীবন দান করতে বাধ্য হয় ।
এমন নয় যে সুলতানের সহচরেরা প্রভুর এহেন আচরণ সবসময় খুশি
মনে মেনে নিত। বরঞ্চ স্মৃতিকাতর হয়ে তারা সেরাগলিওতে কাটানো কর্মহীন
দিনের কথা ভাবত। পুত্রের এ যথেচ্ছাচার যাযাবরসুলভ প্রাণচাতুর্ষের তুলনায়
হয়তো পিতার আয়েশী জীবন আনন্দের ছিল। এক শীতের দিনে ঘরে ফেরার
ইশীরাতে পুরো বিশ ঘণ্টা ঘোড়ার পিঠে থাকে সুলতান ও অন্যদেরও বাধ্য
করে। পূর্বপুরুষদের যুদ্ধ বিক্রমের মতো তীর শিকারের কাহিনীও কবিতাতে
মহান হয়ে আছে। নিজের হাতে প্রতিটি শিকার করা পশুর সবিস্তারে বর্ণনা
লিখে রাখত মাহমুদ ।
সুলতান মাহমুদ স্বেচ্ছায় শুধু দানিয়ুবে কোপরুলু আহমেদের সাথে
অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু যখন প্রধান উজির যুদ্ধ করছিল সুলতান
শিকার করছিলেন। ১৬৬৩ সালে নিজ বাহিনীর সাথে আদ্রিয়ানোপল পর্যন্ত
যাওয়ার পর আহমেদের হাতে পবিত্র ত্তস্ত হস্তান্তর করে সরে যান সুলতান।
বেলগেডে আহমেদ এত বড় বাহিনীর নেতৃতু দেয় যেমনটা সুলেমানের পর
থেকে আর একত্রিত হয়নি। এক্ষেত্রে ওয়ালাসিয়া, রুমানিয়া ও তুর্কি সহায়তায়
হাবসবুর্ঘ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত হাঙ্গেরিয় কৃষকেরা যোগ দেয়।
ড্রাভাতে পৌঁছে সুলেমানের সময়ে ধার্যকৃত কর দাবি করলে প্রত্যাখ্যাত
হয়ে আহমেদ বুদা হয়ে নহসেলে পৌছায়। এখানে অস্টিয়াকে চমকে দিয়ে
প্রায় সত্তুর বছর পর তুর্কিরা কোনো বৃহৎ বিজয় অর্জনে সমর্থ হয়। এর ফলে
আহমেদ আরো উচ্ছাকাজ্জী হয়ে ওঠে ভিয়েনা দখলের ও মহান সুলেমানকে
ছাড়িয়ে যাবার স্বপ্ন দেখতে থাকে ।
এরপর বেলগ্েডে শীত কাটিয়ে পশ্চিমে অথযাত্রা শুরু করে আহমেদ ।
ভিয়েনার সব দুর্গ দখল করার দৃপ্রতিজ্ঞা নিয়ে এগোতে থাকে আহমেদ ।
এহেন হুমকির মুখে ভাস্ভারে অস্ড্রীয়রা শান্তিচুক্তির কথা তুললে নীতিগত দিক
দিয়ে একমত হয় আহমেদ । কিন্তু স্বাক্ষরের পূর্বেই রাব নদী পার হতে চায়
সে কিন্তু সেন্ট গোর্থাডের আশ্রমের কাছে এসে সংখ্যায় ছোট কিন্তু কৌশলগত
দিক দিয়ে দক্ষ রাজকীয় বাহিনীর কাছে দ্রুত পরাজিত হয় আহমেদ ।
১৬৬৪ সালে সেন্ট গোর্থাডের পরাজয়ে ভাগ্যের চাকা উল্টো দিকে ঘোরা
শুরু করে। ইউরোপের খরস্টান শক্তি দ্বারা অবিশ্বাসী তুর্কিরা প্রথমবারের মতো
বৃহত্ভাবে পরাজিত হয়। এই পরাজয়ের মাধ্যমে নতুন মাত্রার সামরিক
অভিজ্ঞতা হয় তুর্কি বাহিনীর প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি, কৌশল এবং
ওঠে। ষোড়শ শতকের যুদ্ধ স্পৃহা নিয়ে তুর্কি বাহিনী তাদের সাথে পায়ে পা
মেলাতে পারেনি ।
সামরিক প্রকৌশলের দিক দিয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় এ
সময় উন্নত ছিল ফরাসিরা । সেন্ট গোর্থাডের অস্টি্িয়াবাসীকেও সাহায্য করে
চতুর্দশ লুইস। কেননা প্রথম কোপরুলুর শাসনামল থেকেই কূটনীতিক সম্পর্কে
ফরাসি ও তুর্কিদের দোটানা চলছে।
অস্িয়া বাহিনীর ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণও কম ছিল না। যুদ্ধ শুরুর দশ
দিনের মাথাতেই প্রধান উজিরের সাথে শান্তি আলোচনায় উদ্যোগী হয়ে ওঠে
তারা । কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে অটোমানরা অস্ড্রীয়দের বিজয় খুশি মনে
গ্রহণ করে। তুর্কিরা নিজেদের অভিযানে বিজয় লাভ করা অঞ্চলসমূহ লাভ
করে ও ইস্তাম্ুলে বিজয়ের বেশে ফিরে আসে ।