আল্প আরসালান ভলিউম ২৭ বাংলা সাবটাইটেল অনুবাদ মিডিয়া

ভলিউম দেখতে পোস্টের নিচে যান
আল্প আরসালান ভলিউম ২৭ বাংলা সাবটাইটেল
অন্যান্য মুসলিম সাম্রাজ্য কোরআনের আইন বা শরিয়ত মোতাবেক চলত । কিন্তু সাম্রাজ্যের ব্যাপকতা ও জটিলতা বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রয়োজন হয়ে পড়ে রাষ্ট্রীয় আইনের । একজন নিশান্জি । সাম্রাজ্যের স্ত্ডসমূহের চতুর্থজন । সুলতানের বাণীসমূহের উপর তার স্বাক্ষর প্রদান করে রাজকীয় সীল তৈরিই নিশান্জির দায়িত্ব ছিল ।
প্রথম মুরাদ এই প্রচেষ্টা শুরু করেছিলেন । দ্বিতীয় মুরাদ একে আরেকটু এগিয়ে নেন। সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ একে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেন। কিন্ত্ব শরিয়ত আইনকেও যথেষ্ট মান্য করতেন সুলতান। এছাড়া প্রথম প্রধান চার খলিফার বাণী সমূহকেও যথেষ্ট শ্রদ্ধা এবং মান্য করতেন সুলতান। নিজের ক্ষেত্রেও যে কোনো রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্বে এ ব্যাপারে প্রধান মুফতির মতামত নিয়ে নিতেন সুলতান। কানুন বইতে সুলতানের কোর্টের সকল নিয়ম-নীতিও লেখা থাকত ।
মাহমুদ নিয়ম করেছিলেন যে কোর্টে চাকরিতে সকল কর্মচারীর পদমর্যাদা ও দায়িতৃ্ অনুযায়ী তাদের পোশাকের রং হবে । যেমন : উজিরের পোশাক হবে মোল্লা আকাশি নীল। বুটের রংও নিজস্ব গুরুত্ব বহন করত। সরকারি কর্মচারীরা পরত সবুজ, প্রাসাদের কর্মচারীরা লাল। রং ছাড়া পোশাকের ডিজাইনেরও গুরুতৃ ছিল। মাথার পাগড়ি বরাদ্দ ছিল মুসলিমের জন্য । কিন্তু
অ-মুসলিমদেরকে লাল, কালো বা হলুদ রঙের মাথার বনেট পরতে হতো। তাদের জুতার রংও ভিন্ন হতো।
একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ নিজের পূর্বপুরুষদের প্রথা থেকে সরে এসেছিলেন। বাইজেন্টাইন রীতি অনুসরণ করেই এমনটা করেছিলেন সুলতান। মাহমুদের পূর্ববর্তী সুলতানেরা সাধারণ মানুষ৷ কর্মচারীদের সাথে স্বাভাবিকভাবে মেলামেশা, খাওয়া-দাওয়া করতেন। কিন্তু ধীরে ধীরে ইউরোপ অভিযানের পর বাইজেন্টাইন প্রভাবে এসে সাধারণের কাছ থেকে সুলতানস্বরূপ দূরত্ বজায় রাখা শুরু করে তীরা। সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ নির্দিষ্ট একটি সংখ্যা দশজনে বেঁধে দিয়েছিলেন যারা একত্রে তার সাথে টেবিলে বসে খাবার খেতে পারবে । কিন্ত মাহমুদ আরো এগিয়ে এ সংখ্যা শৃন্যতে নামিয়ে আনেন। তিনি আদেশ জারি করেন যে কেউ তার সাথে সাম্রাজ্যের জৌলুস সহভাগিতা করতে পারবে না। রাজরক্তের ক্ষেত্রে এ নিয়ম শিথিল হবে।
তৃতীয় পাহাড়ের ওপর নির্মাণ করা প্রথম রাজপ্রাসাদে সুলতান মাহমুদ কাজ্িত দূরত্ব আর গোপনীয়তা পাননি । এই চিন্তা থেকেই ১৪৬৫ সালে সেরাণিলো প্রাসাদ নির্মাণ কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ পঁচিশ বছর লাগার কথা থাকলেও সুলতানের তদারকি আর উদার বকশিশের ফলে এর তিন ভাগের এক ভাগ সময়ে এ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। পারস্য, আবর ও গ্রিক স্থাপত্যবিদেরা এ নকশা করে ছিল। প্রাসাদের দুর্ণের মতো দেয়ালের ভেতরে ছিল দুটি উঠান, তিনটি গেট ।
চারপাশে ছিল সুন্দর বাগান, সম্ভব প্রতিটি গাছ ও ফল ছিল, পানি ছিল পরিষ্কার ও সুপেয়, গান গাওয়া ও খাবার জন্য উভয় ধরনের পাখির কলকালিতে মুখর থাকত বাগান। গৃহপালিত এবং বন্য সব ধরনের পশুরই দেখা মিলত এখানে । শীতকালে লোকচক্ষুর অন্তরালে সুলতান এখানে আশ্রয় নিতেন। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে রাস্তায় বের হলেও কঠিন পাহারার ব্যাবস্থা থাকত তাকে ঘিরে ।
রাজপ্রাসাদ বিভক্ত ছিল প্রধানত দুটি অংশে, বাইরের অংশে দাপ্তরিক কাজ করা হতো । এ অংশেই সুলতানের দপ্তর আর দিওয়ানদের দপ্তর ছিল। আভ্যন্তরীণ অংশে ছিল সুলতানের সিংহাসন কক্ষ আর রাজকীয় বাসভবন। এখানে তার নপুংসক ভৃত্যরাও থাকত। মাহমুদ নিজে পৃথক প্রাসাদে থাকতেই পছন্দ করতেন। ৩৭০ জন নপুংসকসহকারে এটাই ছিল তীর গৃহস্থালি।
সেরাগালিও প্রাসাদে তিনটা দরজা ছিল। প্রথমটির নাম ছিল বাব-ই- হুমাযুন। এ দরজা সরাসরি শহরের সাথে যুক্ত ছিল। এর গায়ে খোদাই করা ছিল একটি বাণী “সুলতান মাহমুদ….মানুষের মাঝে ঈশ্বরের ছায়া এবং আত্মা, দুই মহাদেশ এবং দুই সমুদ্র, পূর্ব এবং পশ্চিমের প্রভু, কনস্টান্টিনোপল শহর বিজয়ী বীর।” তুর্কিদের প্রথম দিককার একটি অভ্যাস ছিল প্রাসাদের দরজাকে আইন এবং ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ।
আঘা দ্বাররক্ষক ছিল প্রধান শ্বেত নপুংসক। তার কাজ ছিল বাইরের দুনিয়ার সাথে সুলতানের সেরাগালিও প্রাসাদের যোগাযোগ রক্ষা করা। তার অধীনে অন্যান্য শ্বেত নপুংসকরা কাজ করত বিভিন্ন দপ্তরে । প্রধান শ্বেত নপুংসকের বিপরীতে ছিল প্রধান কৃষ্ণ নপুংসক। যার কাজ ছিল নারীদের বাসভবন দেখাশোনা করা। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের কাছ থেকেই খোঁজাদের ব্যবহার করা শেখে অটোমান সুলতানরা। খ্রিস্টান রাজ্যসমূহ থেকে এদেরকে আমদানি করা হতো।
প্রধান শ্বেত নপুংসক সুলতানের কোর্টের প্রায় ৩৫০ জন মানুষের দেখাশোনা করত। এসব কর্মচারী প্রধান উজির থেকে শুরু করে প্রাদেশিক গভর্নর, কর সংগ্রহকারী, বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাহী সকলেই ছিলেন প্রাক্তন খিস্টান বংশোডূত। এরা ছিল নাগরিক এবং সামরিক উভয় ক্ষেত্রের কর্মচারী এই নিয়ম তৈরি করে গিয়েছিলেন সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ । তার পুত্র মাহমুদ একে আরো শক্তিশীলী এবং ব্যাপকভাবে প্রসার ঘটিয়েছেন।
বাস্তব দিক থেকে বলা যায় যদি মুসলিমরা সুলতানের ভূত্য হতো তাহলে ঙারা এর সুযোগ নিত। তাদের আত্মীয়রা কর দিতে প্রত্যাখ্যান করত, স্থানীয় পশাসনের বিরুদ্ধে বিপ্লব করত। কিন্তু যদি খিস্টান সন্তানেরা ইসলাম গ্রহণ করে, তাহলে আত্মীয়রা তাদের প্রতি হিংসাত্মক হয়ে শক্রতে পরিণত হবে। এস্তাম্থুল বেড়াতে গিয়ে ব্যারন ওয়েনচেসলেস লিখে গেছেন, “কনস্টান্টিনোগপলের খেখখাও অথবা পুরো তুর্কি ভুমিতে আমি কোনো পাশা দেখিনি বা বলতেও “খনি যে সে জন্মগতভাবেই তুর্কি। অন্যদিকে হয় তাদেরকে অপহরণ করা হয়েছে, নতুবা ধরে আনা হয়েছে অথবা জোরপূর্বক তুর্কি বানানো হয়েছে।” ষোড়শ শতকের মুখ্য শ্বেত-নু-পুংসক ছিলেন রাজপ্রাসাদ স্কুলের প্রধান প্রশাসক এবং পরবর্তীতে সুলতান আদালতের অনুষ্ঠান নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে কর্মরত হন ।
এই প্রক্রিয়াকে সফল করার জন্য সুলতান সেরাগলিও প্রাসাদে রাজকীয় বিদ্যালয় চালু করেন। মাহমুদ নিজে শিক্ষার কদর বুঝতেন এবং নাগরিক এবং উভয় ক্ষেত্রে নিজ সাম্রাজ্যের প্রসার ও উন্নতির জন্য শিক্ষিত কর্মচারীর প্রয়োজনীয়তা বুঝতেন। এই বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য এমন অটোমান সরকারি কর্মচারী তৈরি করা হবে যে যোদ্ধা, দেশপ্রেমিক, বিশ্বস্ত মুসলমান এবং ঝোড়শ শতকের ইটালির লেখকের কথানুযায়ী একজন বিদ্বান ব্যক্তি, সুন্দর বাচনভঙ্গি, সহবত এবং সৎ নীতিবোধের অধিকারী
আল্প আরসালান ভলিউম ২৭ বাংলা সাবটাইটেল অনুবাদ মিডিয়া